সংবাদ সম্মেলনে মায়ের আহাজারি ‘আমার ছেলে দোষি হলে পুলিশের হাতে তুলে দিবো’


admin প্রকাশের সময় : অক্টোবর ২৮, ২০২০, ৩:৪৮ অপরাহ্ন / ৭১
সংবাদ সম্মেলনে মায়ের আহাজারি  ‘আমার ছেলে দোষি হলে পুলিশের হাতে তুলে দিবো’

সিলেট ডেস্কঃ পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ছেলেকে শ্রমিক নেতা রিপন হত্যা মামলায় জড়িত করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন
দক্ষিণ সুরমা বরইকান্দির শফিক আহমদের স্ত্রী রীনা বেগম। শনিবার (৩ অক্টোবর) সিলেট জেলা
প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গোষ্টিগত বিরোধের বদলা নিতে শ্রমিক নেতা রিপনের
মূল হত্যাকারী রেজোয়ান হোসেন রিমু আদালতে জবানবন্দিতে সম্পূর্ণ মিথ্যাভাবে সাওয়াল হোসেন
সাগরকে জড়িত করে জবানবন্দি প্রদান করে। ফলে পুলিশ মূল ঘটনা তদন্ত না করে সাগরকে ধরতে
একাধিকবার বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে। অথচ ট্যাংঙ্কলরি শ্রমিক নেতা রিপন হত্যা মামলার সাক্ষি ও তার
স্বজনরা বলেছেন সাগরের ব্যাপারে কোথাও যেতে হলে তারা যাবেন। আর ঘটনার আগে ও পরে সাগরের
মোবাইল ফোনের কললিস্ট তুললে সম্পূর্ণ বিষয় বেরিয়ে আসবে সাগর জড়িত কি না। খুনের ঘটনায় যদি
ছেলে সামান্যতম জড়িত থাকে, তাহলে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দিবেন মা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রীনা বেগম জানান, তার ২ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে। বরইকান্দি এলাকায়
তিনি পরিবারসহ থাকলেও বড় ছেলে তাঁর নানার বাসায় শিবগঞ্জে থাকে। বরইকান্দি এলাকায় ছোটখাটো
বিষয় নিয়ে উঠতি বয়সের ছেলেদের মধ্যে প্রায়ই মারামারি লেগে থাকে। এজন্য ভবিষ্যৎ শঙ্কায় বড় ছেলে
সাওয়াল হোসেন সাগরকে শিবগঞ্জে রাখেন। স্বামী শয্যাশায়ি থাকায় সন্তানদের ভবিষ্যৎ রক্ষায় মা হিসেবে
তিনি সর্বান্তক চেষ্ঠা করছেন। এরই মধ্যে বরইকান্দির ইজাজুল ইসলাম, মোঃ রেজোয়ান হোসেন রিমু,
মোঃ তারেক আহমদ, অপু প্রভৃতি ছেলেরা এলাকায় চুরি, ছিনতাই করে মর্মে এলাকার লোকজনের নিকট
হতে তারা অবগত হন। গত রমজান মাসে তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে ইজাজুল ইসলাম ও মোঃ রেজোয়ান
হোসেন রিমুর সাথে সাগরের কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির ঐ দিন বিষয়টি অবগত হয়ে
সাওয়াল হোসেন সাগরকে শিবগঞ্জে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

গত ১০/০৭/২০২০ইং তারিখে সন্ত্রাসী ইজাজুল
ইসলাম ও মোঃ রেজোয়ান হোসেন রিমুর নেতৃত্বে বাবনা পয়েন্টে এলাকার কয়েকজন সন্ত্রাসী মিলে
ট্যাংক-লরী শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন রিপনকে কুপিয়ে প্রাণে হত্যা
করে। পুলিশের ভয়ে ঐ দিনই সব আসামী পলাতক হয়ে এলাকা ছাড়া হয়। এক পর্যায়ে, পুলিশ ও এলাকা
বাসীর চাপে ইজাজুল ইসলাম ও মোঃ রেজোয়ান হোসেন রিমু আদালতের আশ্রয় গ্রহন করে। তখন পুলিশ
তাদের রিমান্ডে নিয়ে খুনের মামলা সংক্রান্ত জিজ্ঞসাবাদ করলে আসামী মোঃ রেজোয়ান হোসেন রিমুর
মিথ্যা আশ্রয় গ্রহণ করে তার নিরাপরাধ ছেলেকে খুনের মামলায় ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে জবানবন্দীতে
জড়িয়ে মিথ্যা জবানবান্দি দেয়। উক্ত জবানবন্দি যাচাই বাচাই না করে পুলিশ একাধিকবার বাসায়
অভিযান করে ছেলেকে ধরার জন্য। অথচ ঘঠনার দিন ও সময়ে তার ছেলে নানার বাসায় ছিল। পুলিশ ইচ্ছে
করলেই ঘটনার দিন ও তারিখে সাগরের ব্যবহ্নত মোবাইল ফোনের নম্বর ০১৩১৩৯৪১৭৫৩ কললিষ্ট যাচাই করলে
ঘটনায় সাগর জড়িত নয়, তা জানা সম্ভব হতো।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো জানান, মৃত ইকবাল হোসেন রিপনের সাথে তার ছেলের বাবা ও চাচাদের
সখুব ভালো সর্ম্পক ছিলো। যা এখনও আছে। তার ছেলে ঘটনায় জড়িত নয় মর্মে বাদীও জানেন। এছাড়াও
মৃত মোঃ ইকবাল হোসেন রিপন পূর্বে অনেকবার আসামী ইজাজুল, মুন্না , রিমুদের বিরুদ্ধে
একাধিক মামলা ও জিডি দক্ষিন সুরমা থানায় দায়ের করেছেন। উক্ত জিডি ও মামলায় সাগরের নাম কোথাও
উল্লেখ করা নাই। আসামী ইজাজুল ও রিমু পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ইচ্ছে করে বিজ্ঞ আদালতে তার ছেলে
সাওয়াল হোসেন সাগরের নাম জড়িয়ে জবানবন্দি দিয়েছে। তার ছেলে উক্ত ঘটনার সঙ্গে কোনভাবেই
জড়িত নয়। ছেলেকে ফাঁসানোর জন্য ইচ্ছে করে আসামী রিমু জবানবন্দি দিয়েছে। অথচ মামলার বাদী
এবং সাক্ষীদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা বলেছেন যেখানে যা দরকার তারা সাথে থাকবেন। কারণ বাদী
নিজে ও বুঝতে পারছেন পূর্ব বিরোধ থাকায় রিমু তার ছেলেকে ফাঁসাতে চাইছে। তার নিরাপরাধ
ছেলেকে উক্ত খুুনের মামলার দায় হতে অব্যাহতি প্রদানে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করন তিনি।